পদ্মা কবিতার সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর (PDF)

পদ্মা কবিতার সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর : ‘পদ্মা’ একটি চতুর্দশপদী কবিতা। এ কবিতায় পদ্মা নদীর দুটি ভিন্ন রূপের প্রকাশ পেয়েছে। এ নদী একদিকে যেমন ভয়ংকর অন্যদিকে, এ নদী তার পাড়ের মানুষকে করেছে সমৃদ্ধ। এর ভয়ংকর, প্রমত্ত রূপ দেখে বহু সমুদ্র ঘোরার অভিজ্ঞতায় ঋদ্ধ, দুরন্ত জলদস্যুদের মনেও ভয়ের সঞ্চার হয়।

আবার পদ্মার পলিতে প্লাবিত এর দুই পাড়ের উর্বর ভূমি মানুষকে পর্যাপ্ত ফসল, জীবনদায়িনী সবুজের সমারোহ দিয়ে সমৃদ্ধ করে। বর্ষাকালে এই পদ্মা জলস্রোতে স্ফীত হয়ে ভাসিয়ে নৈয় মানুষের সাজানো বাগান, ঘর, এমনকি জীবন পর্যন্ত। সেই ধ্বংসস্তূপের ভেতর থেকে আবারও প্রাণের স্পন্দন জেগে ওঠে পদ্মাকে ঘিরেই। অর্থাৎ একই পদ্মা কখনো ধ্বংসাত্মক রূপে, কখনো কল্যাণময়ী হয়ে এদেশের জনজীবনের সঙ্গে একাত্ম হয়ে আছে।

পদ্মা কবিতার সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর

সৃজনশীল প্রশ্ন ১ : প্রমত্তা পদ্মার সর্বগ্রাসী রূপ নিয়ে বিখ্যাত শিল্পী আবদুল আলীমের ‘সর্বনাশা পদ্মা নদী’ নামে বহুল প্রচলিত একটি গান রয়েছে। নদী তীরবর্তী মানুষের হাহাকার ভরা দীর্ঘশ্বাস গানটিতে ফুটে উঠেছে—
“পদ্মারে তোর তুফান দেইখা
পরান কাঁপে ডরে
ফেইলা আমায় মারিসনা তোর
সর্বনাশা ঝড়ে।”

ক. জীবন-মৃত্যুর দ্বন্দ্বে নিঃসংশয় কারা?
খ. ‘মৃত জড়তার বুকে খুলেছে মুক্তির স্বর্ণদ্বার’— বলতে কী বোঝানো হয়েছে?
গ. উদ্দীপকটির সাথে ‘পদ্মা’ কবিতার কোন দিকটির সামঞ্জস্য লক্ষ করা যায়? ব্যাখ্যা করো।
ঘ. “উদ্দীপকটি ‘পদ্মা’ কবিতার আংশিক রূপায়ণ মাত্র”— উক্তিটি বিশ্লেষণ করো।

 

 

সৃজনশীল প্রশ্ন ২ : পদ্মা তোমার যৌবন চাই
যমুনা তোমার প্রেম
সুরমা তোমার কাজল বুকের
পলিতে গলিত হেম।
পদ্মা যমুনা সুরমা মেঘনা
গঙ্গা কর্ণফুলী,
তোমাদের বুকে আমি নিরবধি
গণমানবের তুলি!

ক. জীবন-মৃত্যুর দ্বন্দ্বে নিঃসংশয় কারা?
খ. ধ্বংসস্তূপের ভেতর থেকে পদ্মাকে ঘিরে পুনরায় প্রাণস্পন্দন জেগে ওঠে কেন?
গ. উদ্দীপকের কবিতাংশ যেন ‘পদ্মা’ কবিতাটিকেই স্মরণ করিয়ে দেয়” ব্যাখ্যা করো।
ঘ. “উদ্দীপকটি ‘পদ্মা’ কবিতার কেবল একটি দিককেই ধারণ করতে পেরেছে” – বিশ্লেষণ করো।

সৃজনশীল প্রশ্ন ৩ : “সর্বনাশা পদ্মা নদী, তোর কাছে শুধাই
বল আমারে তোর কি রে আর
কূল কিনারা নাই।”

ক. পদ্মার ঘূর্ণি দেখে কারা কেঁপেছে?
খ. “তোমার তরঙ্গভঙ্গে বর্ণ তার হয়েছে পাণ্ডুর” – কেন বলা হয়েছে?
গ. উদ্দীপক ও ‘পদ্মা’ কবিতার সাদৃশ্যসূত্র চিহ্নিত করো।
ঘ. উদ্দীপকে ‘পদ্মা’ কবিতার সম্পূর্ণ ভাব প্রকাশ পেয়েছে কি? তোমার মতামত দাও।

 

 

সৃজনশীল প্রশ্ন ৪ : “এ আমার শৈশবের নদী, এই জলের প্রহার পদ্মা কবিতার mcq
সারাদিন তীর ভাঙে, পাক খায়, ঘোলা স্রোত টানে
যৌবনের প্রতীকের মতো অসংখ্য নৌকার পালে
গতির প্রবাহ হানে।”

ক. মৃত জড়তার বুকে কী খুলেছে?
খ. ‘মুক্তির স্বর্ণদ্বার’ বলতে কী বোঝানো হয়েছে? ব্যাখ্যা করো।
গ. উদ্দীপক ও ‘পদ্মা’ কবিতার সাদৃশ্যসূত্র চিহ্নিত করো।
ঘ. “নদীর গতিধারা জনজীবনেও গতি সঞ্চার করে”— উদ্দীপক ও ‘পদ্মা’ কবিতার আলোকে তোমার মতামত দাও।

সৃজনশীল প্রশ্ন ৫ : “নদী তীরে বাস করি চালাই লাঙল
জল সিঁচে হাল চষে ফলাই ফসল
পলিপড়া মাটিতে ফলে সোনাধান
নদী আমার জীবন-মরণ, নদী আমার প্রাণ”

ক. ফররুখ আহমদের জন্ম কত সালে?
খ. “সংগ্রামী মানুষ তবু দুই তীরে চালায়ে লাঙল”- ব্যাখ্যা করো।
গ. উদ্দীপকের প্রথম দুই চরণে ‘পদ্মা’ কবিতার কোন দিকটি প্রতিফলিত হয়েছে? আলোচনা করো।
ঘ. “নদী আমার জীবন-মরণ, নদী আমার প্রাণ”— ‘পদ্মা’ কবিতার আলোকে উদ্ভিটির তাৎপর্য বিশ্লেষণ করো। পদ্মা কবিতার mcq

 

 

পদ্মা কবিতার mcq সৃজনশীল প্রশ্ন ৬ : বহু দেশে দেখিয়াছি বহু নদ-দলে,
কিন্তু এ স্নেহের তৃষ্ণা মিটে কার জলে? দুগ্ধ-স্রোতোৰূপী তুমি জন্মভূমি-স্তনে।

ক. মৃত জড়তার বুকে কী খুলেছে?
খ. জলদস্যুরা কীভাবে অনেক অভিজ্ঞতা সঞ্চয় করে? ব্যাখ্যা করো।
গ. উদ্দীপকের সঙ্গে ‘পদ্মা’ কবিতার সাদৃশ্যপূর্ণ দিকটি ব্যাখ্যা করো।
ঘ. “উদ্দীপকটি ‘পদ্মা’ আংশিক চেতনাকে ধারণ করেছে মাত্র”— উক্তিটি বিশ্লেষণ করো।

সৃজনশীল প্রশ্ন ৭ : আমি জন্মেছি বাংলায়, আমি বাংলায় কথা বলি,
আমি বাংলার আলপথ দিয়ে হাজার বছর চলি।
চলি পলিমাটি কোমলে আমার চলার চিহ্ন ফেলে।
তেরোশত নদী শুধায় আমাকে, ‘কোথা থেকে তুমি এলে?

ক. পদ্মার কী দেখে জলদস্যুর বর্ণ পাণ্ডুর হয়েছে?
খ. নিৰ্ভীক জওয়ান জীবন-মৃত্যুর দ্বন্দ্বে নিঃসংশয় কেন?
গ. উদ্দীপক ও ‘পদ্মা’ কবিতার সাদৃশ্য কোথায়? ব্যাখ্যা করো।
ঘ. উদ্দীপকটি কী ‘পদ্মা’ কবিতার সামগ্রিকতাকে স্পর্শ করতে পেরেছে? যুক্তিসহ উপস্থপন করো।

 

 

পদ্মা কবিতার mcq সৃজনশীল প্রশ্ন ৮ : উদ্দীপক-১: “ফিরলে আজও পাব কি সেই নদী? পদ্মা কবিতার mcq
স্রোতের তোড়ে ভাঙা সে এক গ্রাম?
হায় রে নদী পেয়েছে সব কিছু।
জলের ঢেউ ঢেকেছে নাম-ধাম।”
উদ্দীপক-২: “নদী তো কোনোদিন রাখেনি আদিজল
সে জল সমুদ্র নৃত্য করে,
কখনো স্মৃতি হয়ে কখনো ঘাম হয়ে
অশ্রু রক্তের সঙ্গী হয়ে যায়।
তবুও এই নদী বইছে অবিরল,
বইছে চঞ্চল।

ক. মৃত জড়তার বুকে কী খুলেছে?
খ. শস্যদানাকে ‘কঠিন শ্রমের ফল’ বলা হয়েছে কেন?
গ. ১নং উদ্দীপকে ‘পদ্মা’ কবিতার কোন দিকটি ফুটে উঠেছে? ব্যাখ্যা করো।
ঘ. ২নং উদ্দীপকে ‘পদ্মা’ কবিতার মূলকথা বাঙ্ময় হয়ে উঠেছে কি? মতামত দাও।

সৃজনশীল প্রশ্ন ৯ : জামালপুর জেলার দেওয়ানগঞ্জ উপজেলার খোলাবাড়িরচর এলাকায় যমুনা নদী বিপুল সম্পদ গ্রাস করে নিয়েছে। জানা যায়, গত বছর ভয়াবহ বন্যায় উপজেলার খোলাবাড়িরচর, বরখাল, চরমাগুরিয়া ও নয়াপাড়ায় যমুনা নদীর তীব্র ভাঙন দেখা দেয়। ফলে ওইসব এলাকায় থাকা ১টি আশ্রয়ণ প্রকল্প, ৩টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, ১টি ধর্মীয় শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, ১টি মসজিদসহ খোলাবাড়ি বাজারের প্রায় সিংহভাগ নদীগর্ভে বিলীন হয়ে যায়।

ক. সাজানো বাগান কোন ঋতুতে ভেসে গেছে?
খ. অনেক ঘণিতে ঘুরে বলতে কী বোঝানো হয়েছে?
গ. উদ্দীপকটি ‘পদ্মা’ কবিতায় উল্লিখিত পদ্মানদীর কোন রূপের পরিচায়ক? ব্যাখ্যা করো।
ঘ. উদ্দীপকে ‘পদ্মা’ কবিতার সবগুলো দিক ফুটে ওঠেনি।”— মন্তব্যটির যথার্থতা যাচাই করো।

সৃজনশীল প্রশ্ন ১০ : “ভাঙন প্রবণ তীরে যাদের আবাস তারা কেউ
সুখে নেই— বরং দুঃখেই কাটে তাদের দিনকাল।”

ক. ফররুখ আহমদের জন্ম কোন জেলায়?
খ. “জীবনের পথে পথে অভিজ্ঞতা কুড়ায়ে প্রচুর”— কোন প্রসঙ্গে কেন বলা হয়েছে?
গ. উদ্দীপক ও ‘পদ্মা’ কবিতার সাদৃশ্যসূত্র চিহ্নিত করো।
ঘ. “নদী তীরের লোকজন সংগ্রাম করে বাঁচে”― উদ্দীপক ও ‘পদ্মা’ কবিতার আলোকে তোমার মতামত দাও।

কঠিন অংশের ব্যাখ্যা

১. কেঁপেছে তোমাকে দেখে জলদস্যু – দুরন্ত হার্মাদ,
‘পদ্মা’ কবিতায় পদ্মার যে দুটি রূপের কথা বলা হয়েছে, তার একটি হচ্ছে ভয়ংকর রূপ। যার সমুদ্রের ভয়ানক ঘূর্ণিপাক সম্পর্কে বিরূপ অভিজ্ঞতা হয়েছে তার কাছেও পদ্মার উম্মাদাতা ভয়ের সৃষ্টি করে। কবির মতে, পদ্মার ভয়ংকর প্রমত্ত রূপ বহু সমুদ্র গোরার অভিজ্ঞতায় ঋদ্ধ হার্মাদের মতো দুরন্ত জলদস্যুদের মনেও ভয়ের সঞ্চার করে।

২. সংগ্রামী মানুষ তবু দুই তীরে চালায়ে লাঙল পদ্মা কবিতার mcq
কঠিন শ্রমের ফল— শস্যদানা পেয়েছে প্রচুর;
ভয়ংকর প্রমত্ত পদ্মার ঢেউ দুপাড়ের সবকিছু ভেঙে ভাসিয়ে নিয়ে যায়। এতে পদ্মা পাড়ের সংগ্রামী মানুষ সবকিছু হারিয়ে নিঃস্ব হয়ে যায়। কিন্তু তারা সর্বস্বান্ত হয়ে গেলেও কঠিন পরিশ্রম করে পদ্মার উর্বর পলিমাটিতে চাষ করে প্রচুর ফসল ফলায়। এভাবে পদ্মা কখনো ধ্বংসাত্মক রূপে আবার কখনো কল্যাণময়ী হয়ে এদেশের জনজীবনের সঙ্গে একাত্ম হয়ে আছে।

 

 

৩. উর্বর তোমার চরে ফলায়েছে পর্যাপ্ত ফসল!
জীবন-মৃত্যুর দ্বন্দ্বে নিঃসংশয়, নির্ভীক জওয়ান
সবুজের সমারোহে জীবনের পেয়েছে সম্বল।
পদ্মা পাড়ের নির্ভীক এবং শক্তিশালী কৃষক উর্বর পলিমাটিতে পর্যাপ্ত ফসল ফলায়। পদ্মার জীবনদায়িনী সবুজের সমারোহে বেড়ে ওঠা এসব পরিশ্রমী কৃষক জীবন ও মৃত্যু নিয়ে ভাবে না। পদ্মাই তাদের মধ্যে সঞ্চার করেছে এমন মনোবল।

৪. বর্ষায় তোমার স্রোতে গেছে ভেসে সাজানো বাগান,
অসংখ্য জীবন, আর জীবনের অজস্র সম্ভার,
হে নদী! জেগেছে তবু পরিপূর্ণ আহ্বান,
বর্ষাকালে পদ্মা পানিতে ফুলে ফেঁপে ওঠে। তখন দুপাড়ের ঘরবাড়ি, সাজানো বাগান এমনকি মানুষের জীবন পর্যন্ত পদ্মার পানিতে বিলীন হয়ে যায় । এমন ধ্বংসলীলা চালানের পরেও পদ্মাকে ঘিরেই আবার জনজীবনে প্রাণের স্পন্দন জেগে ওঠে।

৫. মৃত জড়তার বুকে খুলেছে মুক্তির স্বর্ণদ্বার পদ্মা কবিতার mcq
তোমার সুতীব্র গতি; তোমার প্রদীপ্ত স্রোতধারা৷
পদ্মার ভয়ংকর রূপ দেখে যখন মানুষ স্তব্ধ ও গতিহীন হয়ে যায়, তখন এর গতিই আবার তাদের মনে মুক্তির স্পন্দন জাগিয়ে তোলে। পদ্মার গতিময়তা দেখেই মানুষের জীবনপ্রভাবে একধরনের গতির সৃষ্টি হয়। এর প্রখর স্রোতধারা মানুষকে উদ্দীপ্ত করে তোলে। ফলে মানুষ দুঃখকষ্ট ভুলে পুনরায় সংগ্রামে অবতীর্ণ হতে পারে।

Answer Sheet

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *