ইফতার ও সেহরীর সময়সূচী ২০২৩ pdf | চলতি বছরে রমজান মাসের সেহরি ও ইফতারের সময়সূচি প্রকাশ করেছে ইসলামিক ফাউন্ডেশন (ইফা)। চাঁদ দেখার ওপর নির্ভর করে মঙ্গলবার ১৪৪৩ হিজরির রমজান মাসের সাহরি ও ইফতারের সময়সূচি চূড়ান্ত করা হয়।
চাঁদ দেখা সাপেক্ষে এ বছর পবিত্র রমজান মাস আগামী ৩ এপ্রিল রোববার শুরু এবং শেষ হবে ২ মে। সময়সূচি অনুযায়ী, প্রথম রমজানে সাহরির সময় শেষ হবে ভোর ৪টা ২৭ মিনিটে এবং ফজরের নামাজ শুরু হবে ৪টা ৩৩ মিনিটে। এদিন ইফতারের সময় ধরা হয়েছে সন্ধ্যা ৬টা ১৯ মিনিট।
ইফতার ও সেহরীর সময়সূচী ২০২৩ pdf
►► আরো দেখুন: সরকারি ছুটির তালিকা Download
তবে দূরত্ব অনুযায়ী ঢাকার সময়ের সঙ্গে সর্বোচ্চ ১১ মিনিট পর্যন্ত যোগ করে ও ১০ মিনিট পর্যন্ত বিয়োগ করে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের মানুষ সেহরি ও ইফতার করবেন বলেও উল্লেখ করেছেন ইসলামিক ফাউন্ডেশন।
সেহরি ও ইফতারের সময়সূচি ২০২৩
ইসলামিক ফাউন্ডেশন বলছে, ‘সতর্কতামূলকভাবে সেহরি শেষ হওয়ার ৬ মিনিট পর ফজরের আজান দিতে হবে। সূর্যাস্তের পর সতর্কতামূলকভাবে ৩ মিনিট বাড়িয়ে ইফতারের সময় নির্ধারণ করা হয়েছে।’
তবে প্রথম রোজা শুরুর তারিখ চাঁদ দেখার ওপর নির্ভর করে পরিবর্তন হতে পারে বলেও জানিয়েছেন ইসলামিক ফাউন্ডেশন।
সেহরির দোয়া
نَوَيْتُ اَنْ اُصُوْمَ غَدًا مِّنْ شَهْرِ رَمْضَانَ الْمُبَارَكِ فَرْضَا لَكَ يَا اللهُ فَتَقَبَّل مِنِّى اِنَّكَ اَنْتَ السَّمِيْعُ الْعَلِيْم
উচ্চারণ: নাওয়াইতু আন আছুম্মা গাদাম মিন্ শাহরি রমাজানাল মুবারাকি ফারদাল্লাকা, ইয়া আল্লাহু ফাতাকাব্বাল মিন্নি ইন্নিকা আনতাস্ সামিউল আলিম।
অর্থ: হে আল্লাহ! আমি আগামীকাল পবিত্র মাহে রমজানের নির্ধারিত ফরজ রোজা রাখার নিয়ত করলাম। অতএব তুমি আমার রোযা তথা পানাহার থেকে বিরত থাকাকে কবুল কর, নিশ্চয়ই তুমি সর্বশ্রোতা ও সর্বজ্ঞানী।
সেহরির সময় সম্পর্কে হাদিস
হযরত সাহল ইবনে সা’দ রা. থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আর তোমরা “খাও এবং পান কর যে পর্যন্ত না কাল রেখা দূর হয়ে সাদা রেখা স্পষ্ট হয়”। (আয়াতটি) নাযিল হলো তখনও ”ফজরের” কথাটি নাযিল হয় নি। এমতাবস্থায় লোকেরা রোযা রাখতে চাইলে প্রত্যেকেই দু’পায়ে সাদা ও কাল সুতা বেঁধে নিত এবং (সেহরির সময়) সাদা ও কাল বর্ণ স্পষ্ট দেখা না যাওয়া পর্যন্ত পানাহার করত। পরবর্তী সময়ে আল্লাহ তা’য়ালা “ফজরের” কথাটি নাযিল করলেন। তখন সকলেই জানতে পারল যে, সাদা ও কাল রেখার অর্থ হল রাত (এর অন্ধকার) ও দিন (এর আলো)। সহীহ বোখারী শরিফ।
ইফতার ও সাহরি রমজানের অন্যতম ইবাদত। রাতের শেষ ভাগে সাহরি খাওয়া যেমন সুন্নাত ও কল্যাণের তেমনি দ্রুত ইফতার করায় রয়েছে বিশেষ কল্যাণ। এ কল্যাণ পেতে রোজাদারের ইফতার-সাহরিতে রয়েছে বিশেষ দোয়া ও নিয়ম।
ইফতারের নিয়ত
بِسْمِ الله – اَللَّهُمَّ لَكَ صُمْتُ وَ عَلَى رِزْقِكَ وَ اَفْطَرْت
উচ্চারণ: ‘বিসমিল্লাহি আল্লাহুম্মা লাকা সুমতু, ওয়া আ’লা রিযক্বিকা আফত্বারতু।
অর্থ: ‘আল্লাহর নামে (শুরু করছি); হে আল্লাহ! আমি তোমারই জন্যে রোজা রেখেছি এবং তোমারই দেওয়া রিজিক দ্বারা ইফতার করছি। (আবু দাউদ মুরসাল, মিশকাত)
রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম অসংখ্য হাদিসে যথাসময় ইফতার করার জন্য বিশেষভাবে তাগিদ দিয়েছেন। তিনি বলেছেন, ‘মানুষ যতদিন ইফতারের সময় হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে দেরি না করে ইফতার করবে; ততদিন তারা কল্যাণ লাভ করবে।’
ইফতারের সময় করণীয়
- সময় হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে ইফতার করা।
- ইফতারের সময় অন্য কাজে ব্যস্ত না হয়ে ইফতার করা।
- ইফতারের সময় বেশি বেশি দোয়া ও ক্ষমা প্রার্থনা করা।
- খেজুর, সাদা পানি কিংবা দুধ দিয়ে ইফতার করে মাগরিবের নামাজ জামাআতে পড়া।
- ইফতারে দেরি করে জামাআত তরক না করা।
- ইফতারের সময় ভারী খাবার না খাওয়া। মাগরিব আদায় করে তৃপ্তিসহ পরিমাণ মতো খাবার খাওয়া। আর তাতে শরীর
- থাকে সুস্থ ও সবল। ইফতারের সময় অতিরিক্ত খাবার খেলে জামাআত ও ইবাদত থেকে বঞ্চিত হতে হয়।
ইফতারের পর বা ইফতার করার সময় এ দোয়া পড়া-
হজরত আবদুল্লাহ ইবনে ওমর রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম যখন ইফতার করাকালীন সময়ে বলতেন-
ذَهَبَ الظَّمَاءُ وَابْتَلَتِ الْعُرُوْقُ وَ ثَبَتَ الْأَجْرُ اِنْ شَاءَ الله
উচ্চারণ : ‘জাহাবাজ জামাউ; ওয়াবতালাতিল উ’রুকু; ওয়া ছাবাতাল আঝরূ ইনশাআল্লাহ।’
অর্থ : ‘(ইফতারের মাধ্যমে) পিপাসা দূর হলো, শিরা-উপসিরা সিক্ত হলো এবং যদি আল্লাহ চান সাওয়াবও স্থির হলো ‘ (আবু দাউদ, মিশকাত)
ইফতারের কিছু সময় আগে ইফতারি সামনে নিয়ে বসে বসে তাসবিহ-তাহলিল, তাওবাহ-ইসতেগফার, দোয়া-দরূদ পড়ার মাধ্যমে সময় অতিবাহিত করা। ইফতারের আগ মুহূর্ত থেকে ইফতার করার সময় আল্লাহ তাআলা বান্দার যে কোনো দোয়া কবুল করে নেন।
আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে ইফতারের আগে তাওবা-ইসতেগফার করা, ইফতারের করার তাওফিক দান করুন। উল্লেখিত নিয়মে ইফতার করার তাওফিক দান করুন। আমিন।