সহজেই পুরাতন ভোটার আইডি কার্ড ডাউনলোড করুন – Nu Suggestions BD
বর্তমান যুগে জাতীয় পরিচয়পত্র বা ভোটার আইডি (NID) একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ডকুমেন্ট। এটি আমাদের পরিচয় প্রমাণ করার পাশাপাশি বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি কাজেও অপরিহার্য। কিন্তু অনেক সময় পুরাতন ভোটার আইডি কার্ড হারিয়ে গেলে বা নষ্ট হয়ে গেলে তা পুনরায় সংগ্রহ করা প্রয়োজন হয়।
২০১৮ সালের আগে যারা তাদের ভোটার আইডি কার্ড পেয়েছেন, তাদের আইডি কার্ড সাধারণত পুরাতন ফরম্যাটে থাকে, যা অনলাইন থেকে সরাসরি ডাউনলোড করা যায় না।
তবে কিছু নির্দিষ্ট নিয়ম অনুসরণ করলে এটি খুব সহজেই ডাউনলোড করা সম্ভব। আজকের এই আর্টিকেলে আমরা অনলাইন থেকে পুরাতন ভোটার আইডি কার্ড ডাউনলোড ব বের করার বিস্তারিত নিয়ম এবং করণীয় সম্পর্কে আলোচনা করব।
অনলাইন থেকে পুরাতন ভোটার আইডি কার্ড বের করার নিয়ম
অনলাইন থেকে পুরাতন ভোটার আইডি কার্ড ডাউনলোড করা কিছুটা ধৈর্য এবং সঠিক নিয়ম মেনে চলার উপর নির্ভর করে। প্রথমেই আপনার আইডি কার্ড যদি হারিয়ে গিয়ে থাকে, তাহলে থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করতে হবে।
এরপর জাতীয় পরিচয়পত্রের সরকারি ওয়েবসাইট (services.nidw.gov.bd) থেকে নির্ধারিত ফি পরিশোধ করে রি-ইস্যু আবেদন করতে হবে। আবেদন অনুমোদিত হলে আপনি অনলাইন থেকেই আপনার এনআইডি কার্ড ডাউনলোড করতে পারবেন।
পুরাতন আইডি কার্ড বের করার নিয়ম
পুরাতন ভোটার আইডি কার্ড ডাউনলোড করার প্রক্রিয়া কয়েকটি ধাপে বিভক্ত। প্রথম ধাপে জিডি করা, এরপর ওয়েবসাইটে রেজিস্ট্রেশন করা এবং রি-ইস্যু আবেদন সম্পন্ন করা।
প্রক্রিয়াটি সম্পন্ন করতে আপনার এনআইডি কার্ডের নম্বর এবং জন্ম তারিখ জানা থাকা আবশ্যক। এছাড়া, আবেদন ফরম পূরণ করতে এবং জিডি কপির ছবি আপলোড করতে হবে।
ভোটার আইডি কার্ড হারিয়ে গেলে জিডি করার নিয়ম
আইডি কার্ড হারিয়ে গেলে বা নষ্ট হয়ে গেলে প্রথমেই থানায় গিয়ে একটি সাধারণ ডায়েরি করতে হবে। জিডি করার সময় আপনার হারানো বা নষ্ট হওয়া এনআইডি কার্ডের নম্বর উল্লেখ করতে হবে।
থানার দায়িত্বপ্রাপ্ত পুলিশ কর্মকর্তা জিডি কপি যাচাই করে তা অনুমোদন করবেন। এরপর সেই জিডি কপির একটি স্ক্যান করা ফাইল তৈরি করে রাখুন, যা রি-ইস্যু আবেদনের সময় প্রয়োজন হবে।
নতুন NID একাউন্ট রেজিস্ট্রেশন করুন
জাতীয় পরিচয়পত্রের অনলাইন সেবা পেতে হলে প্রথমে services.nidw.gov.bd ওয়েবসাইটে নতুন NID একাউন্ট রেজিস্ট্রেশন করতে হবে। রেজিস্ট্রেশনের সময় আপনার এনআইডি নম্বর এবং জন্ম তারিখ প্রদান করতে হবে।
এরপর ঠিকানা এবং ফোন নম্বর যাচাইয়ের জন্য ওটিপি কোড ব্যবহার করে ভেরিফিকেশন সম্পন্ন করতে হবে। একবার রেজিস্ট্রেশন হয়ে গেলে আপনি আপনার অ্যাকাউন্টে লগইন করতে পারবেন।
আরও জানুনঃ নতুন NID একাউন্ট রেজিস্ট্রেশন করুন সহজেই
ভোটার আইডি কার্ড রি ইস্যু আবেদন
আপনার বাংলাদেশ NID অ্যাপ্লিকেশন সিস্টেমে সঠিকভাবে লগইন করার পর, প্রথমেই একটি ড্যাশবোর্ড দেখতে পাবেন যা অনেকটা নিচের ছবির মতো। এখান থেকে আপনাকে হোম মেনুতে গিয়ে “রিইস্যু” অপশনটি ক্লিক করতে হবে।
এরপর একটি নতুন পেজ খুলবে যেখানে আপনার ভোটার আইডি রি-ইস্যু করার জন্য একটি ফরম পূরণের নির্দেশনা দেওয়া হবে। ফরমটিতে সংশোধন করার প্রয়োজনীয়তা থাকলে এডিট বাটনে ক্লিক করে প্রয়োজনীয় তথ্যগুলো সম্পাদনা করতে হবে। নিচের ছবিটি দেখে পুরো প্রক্রিয়া সম্পর্কে একটি ধারণা পাওয়া যাবে।
আপনার হারানো ভোটার আইডি কার্ডের জন্য আমরা আগে থেকেই জিডি করার কথা বলেছি। এবার সেই জিডির তথ্য ফরমে পূরণ করতে হবে।
স্ক্যান করা জিডি কপির সাহায্যে জিডির নাম্বার, থানার নাম, এবং জিডি করার তারিখ ফরমে যথাযথভাবে দিতে হবে। ফরমটি পূরণ করার সময় সঠিক তথ্য নিশ্চিত করুন যাতে কোনো সমস্যার সৃষ্টি না হয়।
সবশেষে, ফরমের সমস্ত তথ্য চেক করে “পরবর্তী” বাটনে ক্লিক করুন। এই ধাপটি শেষ করার পর আপনার রি-ইস্যু আবেদন জমা দেওয়া হয়ে যাবে এবং এটি প্রসেসিংয়ের জন্য চলে যাবে।
ভোটার আইডি কার্ড রি ইস্যু ফি পরিশোধ করুন
পুরাতন এনআইডি কার্ড রি-ইস্যুর জন্য বর্তমানে ২৩০ টাকা সরকারি ফি নির্ধারিত। এই ফি পরিশোধের জন্য মোবাইল ব্যাংকিং সেবা, যেমন বিকাশ, রকেট, বা নগদ ব্যবহার করা যেতে পারে।
ফি পরিশোধের সময় সঠিক রেফারেন্স নম্বর ব্যবহার করতে হবে, যা আপনার আবেদন প্রক্রিয়ার একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ।
এনআইডি রিইস্যুর আবেদন সাবমিট করুন
রি-ইস্যু ফি পরিশোধ করার পর আবেদনটি সাবমিট করতে হবে। আবেদন জমা দেওয়ার সময় আপনার প্রদান করা তথ্য এবং ডকুমেন্ট পুনরায় যাচাই করুন। সবকিছু সঠিক থাকলে আবেদনটি জমা দিন।
কয়েক দিনের মধ্যে আপনার মোবাইলে একটি এসএমএস পাঠানো হবে, যেখানে আপনার আবেদন অনুমোদিত হয়েছে কি না, তা জানানো হবে।
পুরাতন এনআইডি কার্ড ডাউনলোড
আপনার আবেদন অনুমোদিত হলে, এনআইডি ওয়েবসাইটে লগইন করুন এবং হোম পেজে “ডাউনলোড” অপশনটি ক্লিক করুন। ডাউনলোডকৃত ফাইলটি প্রিন্ট করে লেমিনেটিং করলে এটি একদম নতুন কার্ডের মতো হবে।
তবে মনে রাখতে হবে, অনলাইন থেকে ডাউনলোড করা জাতীয় পরিচয়পত্রের নম্বর ১০ সংখ্যার হয়ে থাকে, যা আপনার স্মার্ট এনআইডি কার্ডের জন্য প্রযোজ্য।
শেষ কথা
পুরাতন ভোটার আইডি কার্ড ডাউনলোড করা বর্তমানে খুব সহজ এবং দ্রুত হয়ে গেছে। সঠিক নিয়ম মেনে চললে এবং ধৈর্য ধরে কাজ করলে অনলাইনের মাধ্যমে আপনার হারানো জাতীয় পরিচয়পত্র ডাউনলোড করতে পারবেন।
পুরাতন এনআইডি কার্ড ডাউনলোড করার এই প্রক্রিয়া শুধু সময় সাশ্রয়ী নয়, বরং এটি আপনাকে বাড়তি হয়রানির হাত থেকেও মুক্তি দেয়।
শেষ কথা বলতে গেলে, অনলাইন থেকে পুরাতন এনআইডি কার্ড বের করার পুরো প্রক্রিয়াটি অত্যন্ত কার্যকর এবং সবার জন্য সুবিধাজনক। তাই, আপনার ভোটার আইডি কার্ড যদি হারিয়ে যায় বা নষ্ট হয়ে যায়, তবে আর দেরি না করে উল্লিখিত নিয়মগুলো অনুসরণ করে আপনার পরিচয়পত্র পুনরুদ্ধার করুন।