হ্যালো বন্ধুরা আশা করি সকলে অনেক ভালো আছেন। আপনাদের কে আমাদের এই সাইটে আমার পক্ষ থেকে জানাই স্বাগতম। আজকের পোস্ট এ আমি আপনাদের সাথে তাহাজ্জুদ নামাজের নিয়ত ও নিয়ম এই বিষয় টি নিয়ে কথা বলবো। তো চলুন দেরি না করে পোস্ট টি শুরু করে দেওয়া যাক।
নামাজ হলো জান্নাতের চাবিকাঠি। প্রত্যোক মুসলমান দের জন্য ৫ ওয়াক্ত নামাজ ফরজ করা হয়েছে। তবে এজ ৫ ওয়াক্ত নামাজের পাশাপাশি আরো কিছু ওয়াজিব, সুন্নত ও নফল নামাজ রয়েছে যা কিনা অত্যান্ত ফজিলত পূর্ণ নামাজ। যার মধ্য অন্যতম হলো তাহাজ্জুদ নামাজ। তাহাজ্জুদ নামাজ হলো নফল নামাজ। কিন্তু সকল নফল নামাজের মধ্য এটা অন্যতম। আজকের পোস্ট এ আমরা তাহাজ্জুদ নামাজের নিয়ত এবং তাহাজ্জুদ নামাজের নিয়ম সম্পর্কে জানবো।
আবু হোরায়রা রা: থেকে বর্ণিত একটি হাদিসে এসেছেঃ “আমি রাসূলুল্লাহ (সাঃ) কে বলতে শুনেছি। আফজালুস সালাতি বাদাল মাফরুদাতি সালাতুল লাইলি’ অর্থাৎ ফরজ নামাজের পর সবচেয়ে উত্তম নামাজ হলো তাহাজ্জুদের নামাজ।” – (মুসলিম, তিরমিজি, নাসাঈ)
সুতরাং আমরা এর থেকে বুঝতেই পারি তাহাজ্জুদ নামাজটি ঠিক কতটা তাৎপর্য পূর্ণ তাহাজ্জুদ নামাজের নিয়ত ও নিয়ম।
তাহাজ্জুদ নামাজ কি?
তাহাজ্জুদ (تهجد) শব্দের অর্থ টি হলো ঘুম থেকে জেগে ওঠা। তাহাজ্জুদ নামাজ হলো এক টি নফল নামাজ। ফরয নামাজ এর পর অন্যান্য সকল সুন্নাত ও নফল সব নামাযের মধ্যে তাহাজ্জুদ নামাজের গুরুত্ব এবং ফজিলত সব চেয়ে বেশী।
পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ ফরজ হওয়ার আগেই রাসুলুল্লাহ (সাঃ)-এর উপর তাহাজ্জুদ নামাজ বাধ্যতা মূলক ছিল। সেই জন্য তিনি জীবনে কখনো তাহাজ্জুদ নামাজ টি পড়া থেকে বিরত থাকেননি। তবে উম্মতে মুহাম্মদির জন্য এটা সুন্নাতে গায়রে মুয়াক্কাদা অর্থাৎ এ নামাজ আদায় করলে অশেষ পুণ্য লাভ করা যায়, কিন্তু আদায় করতে না পারলে কোনো গুনাহ হবে না। তাহাজ্জুদ নামাজের নিয়ত ও নিয়ম
তাহাজ্জুদ নামাজের নিয়ত
তাহাজ্জুদ নামাজের নিয়ত বাংলা উচ্চারণ সহ নিচে দেওয়া হলঃ-
বাংলা উচ্চারণঃ নাওয়াইতু আন উছোয়াল্লিয়া লিল্লাহি তা’আলা রাকাতাই ছলাতিত তাহাজ্জুদী সুন্নাতু রাসুলিল্লাহি তা’আলা মুতাওয়াজ্জিহান ইলা জিহাতিল কাবাতিশ শারিফাতি আল্লাহু আকবার।
এর অর্থঃ আমি আল্লাহর ওয়াস্তে কেবলার দিকে মুখ করে তাহাজ্জুদের দু-রাকআত নফল নামাজের নিয়ত করিলাম। আল্লাহু আকবার।
আশা করি আপনাদের তাহাজ্জুদ নামাজের নিয়ত নিয়ে আর কোনো সমস্যা থাকবে না। তাহাজ্জুদ নামাজের নিয়ত আপনি আরবি কিংবা বাংলায় করুন কোনো সমস্যা হবে না। তবে আরবিতে করা উত্তম।
তাহাজ্জুদ নামাজের সময়
তাহাজ্জুদ নামাজের সঠিক সময় এশার নামাজ আদায় এর পর থেকে শুরু করে সুবহে সাদিকের আগ পর্যন্ত সালাতুল লাইল অর্থাৎ তাহাজ্জুদের নামাজ পড়া যায়। তবে অর্ধেক রাতের পর থেকে তাতাহাজ্জুদ নামাজের নিয়ত ও নিয়মহাজ্জুদ নামাজ পড়া ভালো। তবে শেষ রাতে তাহাজ্জুদের নামাজ আদায় করা সর্বো ত্তম তাহাজ্জুদ নামাজের সঠিক সময়।
তাহাজ্জুদ নামাজ এর ওয়াক্ত এবং রাকাআত
এশার নামাজ আদায়ের পর থেকে সুবহে সাদিকের আগ পর্যন্ত তাহাজ্জুদ নামাজ পড়া যায়। কুরআনে, রাতের কিছু অংশে তাহাজ্জুদের যে তাকীদ করা হয়েছে তার মর্ম এটাই যে, রাতের কিছু অংশ ঘুমিয়ে থাকার পর উঠে তাহাজ্জুদ নামায পড়া।
তাহাজ্জুদের সর্বোত্তম সময় হলো, এশার নামাযের পর লোকেরা ঘুমাবে। তার পর অর্ধেক রাতের পর উঠে নামায পড়বে। নবী (সাঃ) কখনো মধ্য রাতে, কখনো, তার কিছু আগে অথবা পরে ঘুম থেকে উঠতেন মেসওয়াক ও অযু করে নামায পড়তেন।
তাহাজ্জুদের নামাজ ২ থেকে ১২ রাকাআত পর্যন্ত পড়ার বর্ণনা পাওযা যায়। অর্থাৎ, সর্বনিম্ন ২ রাকাআত এবং সর্বোচ্চ ১২ রাকাআত পড়া যেতে পারে তাহাজ্জুদ এর নামাজ। রাসুলুল্লাহ (সঃ) ৮ রাকাআত তাহাজ্জুদ পড়তেন। তাই ৮ রাকাআত তাহাজ্জুদ নামাজ পড়াই ভালো। তবে এটা আবশ্যক নয়। তাহাজ্জুদের নামাজের কোনো কাজা নেই।
তাহাজ্জুদের নামাজ পড়ার নিয়ম
তাহাজ্জুদ নামাজের নিয়মঃ—
– প্রথমেই জায়নামাজ এ দাড়িয়ে জায় নামাজ এর দোয়া পড়তে হবে।
– এবার তাহাজ্জুদ নামাজের নিয়ত পড়তে হবে।
– তাকবিরে তাহরিমা ‘আল্লাহু আকবার’ বলে নিয়ত বাঁধতে হবে।
– অতঃপর ছানা পড়তে হবে।
– সুরা ফাতেহা পাঠ করতে হবে।
– সুরা ফাতেহা পড়ার পর কেরাত করতে হবে অন্য কোনো সূরা পড়তে হবে। রাসূলুল্লাহ (সঃ) সব সময় এই নামাজে কেরাতের সময় দীর্ঘ সময় কেরাত করতেন। আমাদের ও উচিত দীর্ঘ কেরাত করা তবে কেউ চাইলে ছোট কেরাত ও করতে পারেন।
– এর পর রুকু, সেজদাহ করে ১ম ও ২য় রাকাত শেষ করে ২য় রাকাতে তাশহাহুদ, দরুদ শরিফ, দোয়া মাসূরা পড়ে প্রথমে ডান ও পরে বাম কাধের দিকে মাথা ঘুরিয়ে “আসসালামু আলাইকুম ওয়া রহমাতুল্লাহ” বলে নামাজ শেষ করতে হবে।